বয়স্ক ভাতা ২০২৫: অনলাইনে আবেদন করার সহজ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বয়স্ক ভাতা ২০২৫: ঘরে বসেই সহজ অনলাইন আবেদন পদ্ধতি ও দরকারি কাগজপত্র
বয়স্ক ভাতা নেওয়ার জন্য এখন আর সরকারি অফিসে দৌড়াদৌড়ি করার দরকার নেই। পুরো প্রক্রিয়াটি এখন অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়। আপনি আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটার দিয়েই নিজের বা পরিবারের কারো জন্য ঘরে বসে আবেদন করতে পারবেন।
*কীভাবে শুরু করবেন?
১. প্রথমে যেকোনো ব্রাউজার ওপেন করুন — মোবাইল বা কম্পিউটার, যেটাই হোক।
২. ব্রাউজারের সার্চ বক্সে লিখুন:mis.bhata.gov.bd
অথবা বাংলায় লিখে সার্চ করুন: "বয়স্ক ভাতা আবেদন"
৩. সঠিক লিংকে ক্লিক করলে একটি ফর্ম আপনার সামনে আসবে।
*কীভাবে ফর্ম পূরণ করবেন?
-
প্রথমে “কার্যক্রম” অপশন থেকে বয়স্ক ভাতা সিলেক্ট করুন।
-
এরপর স্ক্রল করে নিচে গিয়ে "যাচাই করণের ধরণ" নির্বাচন করুন – আপনি চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্মনিবন্ধন দিয়ে যাচাই করতে পারেন।
-
সাজেশন: NID দিয়ে যাচাই করলে ভবিষ্যতে ট্র্যাকিং নম্বর রিকোভার করা সহজ হয়।
-
এরপর আপনার এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের নম্বর দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে পরবর্তী ধাপে যান।
* যাচাইয়ের পর কী হবে?
-
সঠিক তথ্য দিলে আপনার নাম, পিতামাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে।
-
ভুল তথ্য দিলে কোনো তথ্য দেখাবে না – তাই সতর্ক থাকুন।
* ফর্মে আপনার নাম, পিতামাতার নাম বাংলায় ও ইংরেজিতে দিতে হবে (দুই পাশে একই রকমভাবে)।
-
জাতীয়তা, বয়স ও লিঙ্গ সিস্টেম অটোমেটিকভাবে পূরণ করবে।
-
এরপর ধর্ম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ইত্যাদি দিতে হবে।
-
যোগাযোগের ঠিকানা দিতে হবে – বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা।
* অতিরিক্ত কিছু তথ্য পূরণ করতে হবে:
-
জমির মালিকানা আছে কিনা
-
স্বাস্থ্যগত বা কর্মক্ষমতার সমস্যা আছে কিনা
-
বার্ষিক আয় কত
-
অন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি সুবিধা পান কিনা
-
নমিনির তথ্য (যাকে ভাতার টাকা প্রয়োজন হলে দেওয়া হবে)।
* আবেদন শেষে যোগ্যতার যাচাই
একটি চূড়ান্ত ফর্ম আসবে যেখানে কিছু প্রশ্ন থাকবে – যেমন আপনি কীভাবে জীবনযাপন করেন, কত আয় করেন, সরকারি চাকরি পেয়েছেন কি না ইত্যাদি। সব তথ্য সঠিকভাবে দিলে এবং আপনি যোগ্য হলে সরকার আপনার আবেদন গ্রহণ করবে।
* অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
-
জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন
-
২ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি
-
নাগরিক সনদপত্র
-
নমিনির পরিচয়পত্র ও ছবি
-
অসচ্ছলতার প্রমাণ (যেমন চিকিৎসার কাগজ, আয়বিহীন সার্টিফিকেট ইত্যাদি)।
* বয়স্ক ভাতা পাওয়ার শর্তাবলী:
-
আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
-
পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ৬৫ এবং মহিলাদের জন্য ৬২ বছর।
-
কর্মক্ষমতাহীন, দুঃস্থ বা স্বল্প আয়ের হতে হবে।
-
বার্ষিক আয় ১০,০০০ টাকার কম হতে হবে।
* যারা আবেদন করতে পারবেন না:
-
সরকারি চাকরিজীবী বা পেনশনভোগী
-
যারা ইতোমধ্যে অন্য কোনো সরকারি সুবিধা পান
-
যারা ভুল তথ্য বা ভুয়া কাগজপত্র দেন
-
যাদের পরিবারে আর্থিক সহযোগিতা ভালো পর্যায়ে রয়েছে
* সরকারের উদ্দেশ্য:
এই ভাতা শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, বরং বয়স্কদের সম্মান ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি প্রচেষ্টা। যেন বৃদ্ধ বয়সেও কেউ অবহেলিত না থাকেন।
* আবেদন করার পর স্ট্যাটাস চেক করবেন যেভাবে:
-
আবার mis.bhata.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
-
জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের নম্বর দিয়ে লগইন করুন
-
আবেদন স্ট্যাটাস দেখতে পাবেন
-
এছাড়াও যাচাই শেষে মোবাইলে এসএমএস আসতে পারে
* বয়স্ক ভাতা সংক্রান্ত ইতিহাস জানুন:
প্রতি অর্থবছরে কতজনকে এই ভাতা দেওয়া হয়েছে, ভাতার পরিমাণ কত ছিল – এসব তথ্য জানা আমাদের নাগরিক দায়িত্বের অংশ। এটি আপনাকে সচেতন এবং দায়িত্ববান নাগরিক হতে সহায়তা করবে।
* উপসংহার:
এই গাইডে বয়স্ক ভাতার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, শর্তাবলী ও স্ট্যাটাস চেক পর্যন্ত সবকিছু ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আশা করি এখন আপনি নিজেই অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারবেন অথবা অন্য কাউকে সহায়তা করতে পারবেন।
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url