রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ গুলো কি কি জেনে নিন বিস্তারিত
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ কি? এটা সম্পর্কে। এ বিষয়টি এখনো আমাদের অনেকেরই কাছে অজানা। মূলত রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া হচ্ছে এমন একটি শারীরিক সমস্যা, যেখানে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়, যার ফলে দেহে রক্তশূন্যতা বা হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেয়।
তাই আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ গুলো কি কি? এবং আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার কি রক্তশূন্যতা হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে।
পোস্ট সূচিপত্র:
রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ গুলো কি কি
রক্তশূন্যতা আমাদের জীবনের এমন একটি শারীরিক সমস্যা যেখানে মূলত শরীরের প্রয়োজনীয় লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেয়। আর এই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করে। অনেক সময় আমরা এটাকে শারীরিক দূর্বলতা বা ক্লান্তি মনে করে বিষয়টি এড়িয়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে।
আরো পড়ুন: কিডনি ড্যামেজের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি কি জেনে নিন
তবে এমন কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা দিলে আমাদের অবহেলা না করে রক্তশূন্যতার বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। রক্তশূন্যতা নানা কারণে হতে পারে। রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির প্রদান উপাদান হচ্ছে আয়রণ, আর এই আয়রণ এর ঘাটতি জনিত কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে।
এছাড়াও, আর অনেক কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে যেমন: ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি, দীর্ঘমেয়াদী রোগ (বিশেষ করে কিডনি রোগ), দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ (যক্ষ্মা), ক্যান্সার, থাইরয়েড সমস্যা, অস্থিমজ্জায় সমস্যা, সময়ের আগেই রক্ত কণিকা ভেঙে যাওয়া, রক্তক্ষরণ (প্রস্রাব বা মলত্যাগের সময়) ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: নাপা ট্যাবলেট এর কাজ কি?
তবে এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড় অপুষ্টিজনিত একটি সমস্যা। শুধুমাত্র অপুষ্টি বললেই ভুল হবে, আয়রণের অভাব কিংবা থ্যালাসেমিয়ার মতো রোগও এই সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরে হওয়া ক্ষত থেকেও দেখা দিতে পারে রক্তশূন্যতা।
যদি পরিবারের সদস্যদের একজন রক্তশূন্যতায় ভুগেন তাহলে বাকিদেরও হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় পুরুষের দেহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৩৫ গ্রাম এবং নারীদের দেহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১২০ গ্রাম থাকে। এর থেকে কম হলেই তাকে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার লক্ষণ বলা হয়। এখন আসি রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ গুলো কি কি?
আরো পড়ুন: ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি - ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
গুরুতর লক্ষণ গুলো হলো:
- সবসময় অস্থির দূর্বলতা লাগা, এমনকি বিশ্রাম নিলেও সেটি স্বাভাবিক না হওয়া।
- হালকা হাঁটা বা সামান্য কাজে হাঁপিয়ে যাওয়া , শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
- হৃদস্পন্দন দ্রুত বা অনিয়মিত হয়ে যাওয়া, বিশেষ করে ব্যায়াম বা হাঁটা চলার সময়।
- অনেক সময় রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে বুক ধড়ফড় করা বা ব্যাথা অনুভব করা।
- মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
- ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া বিশেষ করে ঠোঁট, চোখের নিচের অংশ বা নখের নিচে রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
- মনোযোগ ঘাটতি বা বিভ্রান্তি বিশেষ করে এটি বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- উপরের যেকোনো একটি গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে।
- পরীক্ষার রিপোর্টে যদি হিমোগ্লোবিনের লেভেল কম আসে। স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে পুরুষের ১৩৫ গ্রাম, নারীদের ১২০ গ্রাম।
- বুক ধড়ফড় বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটলে।
- প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা (CBC) করে সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে হবে এবং আয়রণ, ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিডের পরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
লেখকের শেষ কথা
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি রক্তশূন্যতায় ভোগার গুরুতর লক্ষণ গুলো কি কি সেই বিষয়ে। এটি একটি গুরুতর শারীরিক সমস্যা। তাই আপনার যদি উপরের আলোচনাকৃত সমস্যা গুলোর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি দেখা দেয় তাহলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আজকের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে এটি আপনার পরিচিতিদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য....।
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url